১০ অগাস্ট, ২০২৫
ছবি: ১. ভূক্তবোগী শহিদুল ইসলাম। ২. উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ পত্র
বগুড়ার ধুনটে মব সৃষ্টি করে ভাঙচুর, লুটপাট ও অবরুদ্ধসহ চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের পীরাপাট গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শহিদুল ইসলাম ২০০৮ সালে রেজিস্ট্রি দলিল মূলে জমি ক্রয় করে ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন। গত ১ মাস আগে ওই এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তার মণ্ডলের ছেলে শাহাদুল হোসেন মণ্ডল, গোদা মণ্ডল, আব্দুল কাফী, সফিকুল ইসলাম এবং মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে সুকলু মিয়া, ইংরেজ উদ্দিন, কালু মিয়া সন্ত্রাসী কায়দায় শহিদুলের নিকট থেকে ১,০০,০০০/- (এক লাখ) টাকা চাঁদা দাবি করে। সে চাঁদা না দেওয়ায় তার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বগুড়া কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত সরকারি রাস্তার জায়গা অবৈধভাবে দখল করে এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঘর ভাঙচুর করে ভিতরে রাখা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মূল্যের রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য সামগ্রী লুটপাট করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তারা শহিদুলের পরিবারকে ঘরের ভিতর জিম্মি করে। পরে জিম্মিদশা থেকে রক্ষা পেতে সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন শহিদুল। পরবর্তীতে ধুনট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের উদ্ধার করে।
শহিদুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসীরা বর্তমানে মব সৃষ্টি করে সরকারি রাস্তার জায়গায় বেড়া নির্মাণ করে তার পরিবারকে অবরুদ্ধ করেছে। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার বাড়িঘরে অবরুদ্ধ অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তার বড় মেয়ে বগুড়া নার্সিং কলেজে এবং ছোট মেয়ে বাগবাড়ী শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজে লেখাপড়া করে। অবরুদ্ধ জীবনযাপনের কারণে তাদের লেখাপড়ায় চরম বিঘ্ন ঘটছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন—আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তির সামনের সাবেক ৩৫১ হাল ৬৭৬ দাগের ৬.৫ শতাংশ জমি বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক ২২/সওজ/২০০৪ সালে অধিগ্রহণ করেছে। ওই অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তির মূল্য বাবদ ২০,৬১৬/৭৫ টাকা মব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিরা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করেছে। তারা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণকৃত রাস্তার জায়গায় বেড়া নির্মাণ করে গত ১ মাস যাবৎ আমার পরিবারকে অবরুদ্ধ করেছে।
শাহাদুল হোসেন মণ্ডল জানান, শহিদুল ইসলামের দায়ের করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। “আমরা তাদের ঘর ভাঙচুর করিনি, কোনো লুটপাটও করিনি, এমনকি কোনো রাস্তাও বন্ধ করিনি। আমরা বেড়া দিয়ে অন্তত তাদের চলাচলের জন্য জায়গা রেখেছি। বরং শহিদুল ইসলাম নিজেই আমাদের মারার জন্য লোক ভাড়া করে এনেছিল। এখনও তার ভাড়া করা লোকদের ভয়ে পাশের বাজারে যেতে পারছি না।”
এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনে গণশুনানির মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।