০৫ অক্টোবর, ২০২২
ছবি: হকারদের কাছে পুনরায় দখল রাজাঝির দীঘির পাড়
ফেনীর ঐতিহাসিক রাজাঝির দীঘির ফুটপাতজুড়ে গেঁড়ে বসা অবৈধ স্হাপন ৮ম বারের মতো উচ্ছেদ হলো। হকারদের কে প্রশাসনের সাত দিনের আল্টিমেটামের ছয় দিনের মাথায় হকারেরা প্রশাসনের নির্দেশনার প্রতি সম্মান রেখে তারা তাদের স্হাপনা সরিয়ে নিয়ে যান।
এতোকিছুর পরও থামছে না 'দখলবাজি'। হকারেরা স্বেচ্ছায় উচ্ছেদ করে আবার ফের দখল। অনেকটা যেন যেই লাউ সেই কদু।
আসলে যতক্ষণ পর্যন্ত হকারদের পুর্নবাসন হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত দখল পুরোপুরি রোধ করা যাবে না।
আয়-উপার্জনের জন্য অল্প পুঁজিতে ঐতিহাসিক রাজাঝির দীঘিকে বেছে নিয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অভিযান চালিয়ে তাদের উচ্ছেদ করলেও ' চোর-পুলিশ খেলে ফের বসছেন।
হকারদের কথা চিন্তা করে স্হায়ী সমাধান তথা হকারদের পুর্নবাসন অতীব প্রয়োজন। বারবার উচ্ছেদ অভিযান, হকারদের স্বেচ্ছায় উচ্ছেদ তারপর আবার দখল। হকারদের ও পেটের দায় বলে একটা কথা আছে । হকারদের স্হায়ী পুর্নবাসন ছাড়া স্হায়ী সমাধান সম্ভব নয়।
ফেনীর প্রাচীন জনপদের স্থাপত্যের নিদর্শন রাজাঝির দীঘি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রাজাঝির দীঘির পাড়ে বসে ব্যবসা করছেন বহুদিন। অন্যদিকে ফেনীর কর্মজীবী মানুষের অবসর সময় কাটানোর এক জনপ্রিয় নাম রাজাঝির দীঘি।পথচারীদের প্রশান্তিটুকু মিলছে এই দিঘীর পাড়ে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নির্মল, গোছানো পরিবেশে অভ্যর্থনা জানায় সবুজ প্রকৃতি। গাছের শীতল ছায়ায় বসে নিজেকে কিছু হলেও সতেজ করে নিচ্ছেন শহরের মানুষ। দিঘীর চারপাশজুড়ে রয়েছে সুদৃশ্য হাঁটার পথ। সেই পথে প্রাতঃভ্রমণে বের হচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের নাগরিকরা। পথের পাশেই লাগানো নানা প্রজাতির ফুল, পাতা বাহারের মধ্যে রয়েছে বসার আসন। সবমিলিয়ে অসাধারণ আবহ তৈরি করেছে ফেনী পৌর কর্তৃপক্ষ।
ফেনী শহরের মানুষদের স্বস্তিতে বসার ও হাঁটার অন্যতম স্থান এই রাজাঝির দিঘীর পাড়। দীর্ঘদিন ধরে এখানে হাঁটাচলার পরিবেশ ছিলো না পৌরসভার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এখন আবার সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
গত ৩৫ বছর ধরে পাড়গুলো বারবার অবৈধ দখল হওয়ার কারণে আসল রূপে ফিরে আসছে না এ দর্শনীয় দিঘী। পাড়ের রাস্তাগুলোতে আবার ভিড় করতে শুরু করেছে হকাররা। সাম্প্রতিক সময়ের দিঘীর অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সৌন্দর্যবর্ধনের ফলে নজর কাড়ছে সাধারণ মানুষ ও ভ্রমণ পিপাসুদের।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীন জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে ও ফেনী পৌরসভার তত্ত্বাবধানে কর্তৃপক্ষের নেওয়া উদ্যোগে পাল্টে গেছে দীঘির চেহারা। পর্যটকদের যাতায়াত বেড়েছে কয়েকগুণ।
ফেনী পৌরসভার উপ প্রকৌশল বিভাগ জানান, ৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজাঝির দিঘীরপাড়ের দৃষ্টিনন্দন বিনোদনকেন্দ্রের নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ঐতিহাসিক রাজাঝির দীঘির চারপাশ দখলমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।দিঘীর এক কোণায় একটি দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা স্থাপন করা হয়েছে। বসার জন্য সুব্যবস্থা করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও পাতা বাহারের গাছ। রাতের বেলায় দিঘীরপাড়কে নিরাপদ রাখার জন্য করা হয়েছে বাতির ব্যবস্থা। ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে পাত্র রাখা আছে। বারবার অভিযান চালিয়ে দিঘীর চারপাশ অবৈধ দখলমুক্ত করা আদৌ সম্ভব হচ্ছে না।