১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
মোঃ মাহবুবুল ইসলাম, 
ছবি: আসামীদ্বয়ের একজন
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত আসামিকে সুকৌশলে গ্রেফতার করে পাওয়া গেল তার কাছে থাকা ভয়ংকর মাদক হেরোইন। পুঠিয়া থানায় যোগদানের পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন নিজেই গ্রেফতার করেন ঐ আসামীকে। থানায় যোগদানের পর প্রথম মামলা হাতে নিয়েই এই চমকপ্রদ সফলতা অর্জন করেন ঐ কর্মকর্তা!!
জানা যায়, নাটোর সদর থানার আলিপুর গ্রামের মৃত সেলিম হোসেনের তরুণ ছেলে মোঃ রাব্বিল হোসেন ওরফে আশিক (২১) ও রাজশাহীর পুঠিয়া থানার অন্তর্গত নতুন গাঁওপাড়া ঢালানের ফারুক শেখের ছেলে মোঃ শাকিল শেখ যৌথভাবে নাটোর সদরের জালালাবাদ এলাকার নোয়াখালী পাড়ার, মোঃ করিম (৬২) এর ছেলে রেজাউল করিম (৪০) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করায় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে মৃত ভেবে পাশের সরিষার জমিতে ফেলে ভ্যানগাড়ি নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে আসামিদ্বয়। পরবর্তীতে গত ০৫ই ফেব্রুয়ারী রোজ রবিবার পুলিশ মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে পাঠায়। সকাল এগারোটার দিকে পুঠিয়ার ম্যাচপাড়া বিলের মধ্যে একটি সরিষার জমি থেকে রেজাউলকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুঠিয়া থানার নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ফারুক হোসেন বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে গতকাল শাকিল শেখ নামের একজনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
আরো জানা যায়, আইনি সহায়তার পাশাপাশি কিছু নগদ অর্থ দিয়ে ইতিমধ্যেই সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ও এএসপি। এখন দেশবাসীর কাছে সহায়তা চান ভুক্তভোগীর পরিবার।
আসামিদ্বয় যৌথভাবে পরিকল্পনা করে ভুক্তভোগী ভ্যানচালক রেজাউল করিমকে কৌশলে ডেকে নিয়ে উপযুক্ত স্থানে গিয়ে আঘাত করে। ভুক্তভোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আসামিদ্বয় তাকে মৃত মনে করে সরিষা ক্ষেতে ফেলে আসে এবং ঐ ভ্যানচালকের ভ্যান গাড়ি, কাছে থাকা ৬ হাজার ৫০০ টাকা ও মোবাইল ফোনও নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামীদ্বয় উপজেলার বিল মারিয়া বাজারের আলী হোসেন প্রধান এর কাছে ঐ ভ্যান বিক্রয় করে। এরপর থানার ওসির দক্ষতায় উক্ত ভ্যান গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার ১৬৪ ধারায় আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জমানবন্দী দিয়েছে।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ভ্যানচালক রেজাউলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে মৃত ভেবে একটি সরিষার জমিতে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় তার ভ্যানটি নিয়ে যায়। ভ্যানচালক বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
উল্লেখ্য যে, ভুক্তভোগী আহত ঐ ভ্যানচালক ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। গরিব ভ্যানচালক রেজাউল করিমের চিকিৎসায় প্রতিদিন প্রচুর টাকা ব্যয় হচ্ছে। যার ব্যয় বহন করা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মৃত্যু পথযাত্রী ভ্যানচালক রেজাউল করিমের চিকিৎসার খরচ যোগাড় করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অসহায় পরিবারটি। তবে মানুষের কাছে থেকে ধার-দেনা করে চলছে রেজাউল করিমের চিকিৎসার খরচ। ইতোমধ্যেই ভুক্তভোগীর পিতা তার অল্প একটু জমি ছিল তা প্রায় এক লাখ টাকায় বন্ধক রেখেছেন অন্য মানুষের কাছে। প্রতিদিন ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে ভ্যানচালক রেজাউল করিমের চিকিৎসায়, এমনটিই জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর ছোট ভাই মোঃ রাজিব আহমেদ।
ভুক্তভোগীর ছোট ভাই রাজীব আহমেদ, “তারুণ্য ২৪” এর মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে ভ্যানচালক বড় ভাইয়ের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন। পাশাপাশি সকলের নিকট তার ভাইয়ের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
আইসিইউতে ভর্তি মৃত্যু পথযাত্রী রেজাউল করিমকে সহায়তা করতে চাইলে, তার ছোট ভাই রাজিব আহমেদের মোবাইল 01747-704155 (পারসোনাল বিকাশ) নাম্বারে যোগাযোগ করবেন।
