৩০ এপ্রিল ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
বিশ্বকাপ ফুটবল / খেলাধুলা

স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শেষ আটে আফ্রিকান সিংহ মরক্কো

০৭ ডিসেম্বর, ২০২২

মোঃ শিবলী সাদিক,
বিশেষ প্রতিনিধি (ক্রীড়া)

ছবি: মরক্কো জাতীয় দল।

কাতার বিশ্বকাপ যেন অঘটনের বিশ্বকাপ। প্রথমেই আর্জেন্টিনার সৌদি আরবের সাথে ২-১ গোল ব্যবধানে হার।গ্রুপ পর্ব থেকে বেলজিয়াম, জার্মানির মতো দলগুলোর নাটকীয় বিদায়। এ ধারা যেন অব্যাহত রাউন্ড অব -১৬ তে।স্পেন টাইব্রেকারে ৩-০ গোল ব্যবধানে হেরেছে আফ্রিকান দেশ মরক্কোর কাছে।এ যেন মরক্কো স্পেনের মাঝে জিব্রাল্টার প্রণালির মতো পেনাল্টি প্রণালি। 


এটি ছিলো এ আসরের ২য় পেনাল্টি শুট। প্রথম পেনাল্টি শুটে জাপান ক্রোশিয়ার কাছে হেরেছে ৩-১ গোল ব্যবধানে। প্রথম শটেই সিমনকে ফাকি দেন আবদেলহামিদ সাবিরি। কিন্তু পাবলো সারাবিয়ার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসলে আভাস পাওয়া যায়, আজ তাদের দিন না। ২য় শটে হাকিম জিয়েচ আবারও সিমনকে ফাঁকি দিলে আশায় বুক বাধে আফ্রিকান দেশটি। তবে সোলেরের শট বোনোর হাতে আটকে গেলে অনেকটাই এগিয়ে যায় মরক্কো। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তাদের নকআউট পর্বে ওঠাটা যে একেবারেই হাওয়ায় হয়ে যায়নি, তা বুঝতে শুরু করে স্প্যানিশরা। 

মরক্কোর ৩য় শটে এসে উনাই সিমন বেনাউনের শট ফিরিয়ে দিলে কিছুটা আশা টিকে থাকে স্পেনের। কিন্তু ৩য় শটেও যে বুসকেটস বল জালে জড়াতে পারবেন না, এটা ছিল অবিশ্বাস্য। ইতিহাস গড়ার পথে নিজের কাজটা তখন করেই ফেলেন বোনো। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ১২০ মিনিট তো বটেই, টাইব্রেকারেও নিজের জাল অক্ষত রাখেন তিনি। আর দলের ইতিহাস গড়ার শেষ কাজটি করেন দেশটির পোস্টার বয় আশরাফ হাকিমি। ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে আসা দেশটি প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেয় কোয়ার্টার ফাইনালে।




এর আগে, অবশ্য ঘটনা হতে পারতো সম্পূর্ণ ভিন্ন। শেষ ২৪ ম্যাচের সবক’টিতে প্রতিপক্ষের জাল কাঁপিয়েছে স্প্যানিশরা। রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে শুরু থেকেই নিজেদের চিরাচারিত টিকিটাকার দিকে মনোযোগ দেয় লুইস এনরিকের দল। বল পজেশনে রেখে আক্রমণে গিয়ে পোস্টের কাছাকাছি একাধিক শট নিয়েও ডেডলক ভাঙতে পারেনি স্পেন। অন্যদিকে, গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেও স্প্যানিশ রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে পারেনি মরক্কো। 

গ্রুপের প্রথম ম্যাচে যেভাবে গোলবন্যা বসিয়েছিল লা ফুরিয়া রোহারা, তার কিছুই এর পরের ম্যাচগুলোতে দেখাতে পারেনি এনরিকের শিষ্যরা। 

ম্যাচে অনেকগুলো সহজ সুযোগ মিস করেছে মরক্কো। তারা চাইলেই গোল ব্যবধান হয়ে যেতে পারতো ২/৩-০ কিন্তু সহজ কিছু সুযোগ পেয়েও তারা কাজে লাগাতে পারেনি। গোল ব্যবধানও বাড়েনি। স্পেন পুরো ম্যাচ জুড়ে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেও আটে গেছে ফাইনাল থ্রাডে। নিচ থেকে স্পেনের ছোট ছোট পাসে তৈরি করা প্রতিটা আক্রমণ বিপদজনক হওয়ার পূর্বেই তা শেষ করে দিয়েছে মরক্কোর রক্ষণভাগ। 

ম্যাচের শেষ দিকে ড্যানি অলমোর ফ্রি-কিক থেকে মরক্কোর গোলরক্ষক বোনো বাধা হয়ে না দাঁড়ালে অতিরিক্ত সময়ে গড়াতো না ম্যাচটি। গোলশূন্যভাবে ম্যাচ শেষ হলে, আসরে ২য় বারের মতো অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে গড়ায় স্পেন-মরক্কো’র রাউন্ড অব সিক্সটিনের খেলাটি। 

১০৪ মিনিটে ওয়ালিদ ছেদিরা পেয়েছিলেন ম্যাচের সবচেয়ে দারুন সুযোগ। স্প্যানিশ গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ এই মরক্কোর ফরোয়ার্ড। সাইমনের হাতে বল না আটকালে ইতিহাস গড়া হয়ে যেতো আফ্রিকান দেশটির। দুই দলের গোলরক্ষক নিজেদের ৯০ মিনিটের ধারাবাহিকতা ধরে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে ধরে রাখায় গোলশূন্যতে শেষ হয় প্রথম ১৫ মিনিটের খেলা।




২য় ১৫ মিনিটেও চাপ ধরে রাখে স্পেন। কিন্তু গোল যেনো আজ সোনার হরিণ! পাল্টা আক্রমণে মরক্কোও সুযোগ পেয়েছিল; তবে ছেদিরা খেই হারান বক্সের ভেতর ঢুকে। শেষ পর্যন্ত ১২০ মিনিটেও গোল বের করে পারেনি দুই দলের কেউই। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে বোনোর বীরত্বে ইতিহাস গড়ে শেষ আটে এখন আফ্রিকান দেশ মরক্কো।

Related Article