১৬ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ / জাতীয় / রাজনীতি

১০ দফায় যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা, ৭ এমপির পদত্যাগ

১১ ডিসেম্বর, ২০২২

মোঃ শামীম হোসাইন,
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

ছবি: মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ বিশাল গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবিতে সরকারবিরোধী ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে সাথে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে গণমিছিল কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে এই আন্দোলন মাঠে গড়াবে। একই সাথে সমাবেশের মঞ্চ থেকে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা।
১০ দফা দাবির ঘোষণা দিয়ে সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঘোষিত এই ১০ দফার ভিত্তিতে আগামী দিনের আন্দোলন চলবে। প্রতিটি কর্মসূচি পালন করা হবে যুগপৎভাবে। তিনি বলেন, স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। শেখ হাসিনাকে যত দ্রুত সম্ভব পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে।


নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে মহানগর দক্ষিণের গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় এই গণসমাবেশ করে বিএনপি। সমাবেস্থল নিয়ে বহুমুখী দেনদরবার ও বিকল্প ভাবনার পর এই মাঠে ২৬ শর্তে সমাবেশের অনুমতি পায় দলটি। সমাবেশের আগের দিন বিকেলে এই অনুমতি পাওয়ার পরপরই মাঠমুখী নেতাকর্মীদের ঢল নামতে শুরু করে, যা গতকাল শনিবার সকালেই লোকে-লোকারণ্য হয়ে উঠে। যাত্রাবাড়ী, সায়দাবাদ, মতিঝিল, খিলগাঁও ফ্লাইওভার পর্যন্ত ছিল লোকে ঠাসা। ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ হলেও সমাবেশে অংশ নেয় বিএনপির প্রতিটি সাংগঠনিক জেলার নেতাকর্মীরা। মিছিলে মিছিলে চারদিক সরব করে রাখেন তারা।
সকাল ১০টা ২০ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে গণসমাবেশ শুরু হয়। বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে বক্তব্য রাখেন সমাবেশের প্রধান অতিথি ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

১৩ ডিসেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ : ১০ দফা তুলে ধরার পর ড. মোশাররফ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে আরো রয়েছে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতাকর্মী গ্রেফতার ও হত্যার প্রতিবাদে আগামী ১৩ ডিসেম্বর সারা দেশের মহানগর ও জেলায় বিক্ষোভ মিছিল।
নয়াপল্টনে আক্রমণ বর্বরোচিত : ড. মোশাররফ বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর সরকারের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা, অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার ও দলীয় কার্যালয় ভেঙে চুরমার করেছে। বিনা উসকানিতে এমন বর্বরোচিত আক্রমণ মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর আক্রমণের কথাই মনে করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন বলেই বিএনপির সমাবেশকে ভয় পায়। তারা বিএনপিকে কোনো সমাবেশ করতে দিতে চায় না। এরা গণতন্ত্র চায় না। স্বাধীনতার পর এই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। এখন আবারো অলিখিত বাকশাল কায়েম করা হয়েছে। ফলে যারাই আজ গণতন্ত্র চায়, ভোটের অধিকারের কথা বলে তাদের ভয় পায়।


জনগণ এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না : ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপির বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিটি সমাবেশে সরকার বাধা দিয়েছে। তাদের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে প্রতিটি সমাবেশ বানচালের চেষ্টা করেছে। সব বাধা উপেক্ষা করে মানুষ নদী সাঁতরিয়ে, ভেলাতে পার হয়ে, সাইকেলে, হেঁটে ওই সব সমাবেশ সফল করেছে। সরকার এই সমাবেশে বাধা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ঢাকা বিভাগের সাধারণ মানুষ এই সমাবেশে অংশ নিয়ে সরকারের রক্তচক্ষুর জবাব দিয়েছে। জনগণ বার্তা দিয়েছে যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, তাদের নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, যারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে তাদের নিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। দেশের জনগণ আরো বার্তা দিয়েছে, এই সরকারকে তারা আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না, অনতিবিলম্বে তারা এই সরকারের বিদায় দেখতে চায়।

Related Article