১৫ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সাহিত্য ও সংস্কৃতি

৫২'র একুশ আমাদের চেতনা

২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

সাইফুর রহমান বাদল,
হরিণাকুণ্ডু উপজেলা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীর সব দেশের  ভাষা ও জাতিগত পরিচয় আছে। ভাষা হলো ভাব বিনিময় ও প্রকাশের পৃরতিকী প্রত্যয় বিশেষ। আর মায়ের ভাষাকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল পাকিস্তান শাসকরা। আমাদের দেশ, বাংলা ভাষা ও বাঙালীর পরিচয় তুলে ধরার জন্যই ২১শে ফেব্রুয়ারীর ভাষা আন্দোলন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী এই দিনটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। ছাত্র জনতার প্রাণের দাবি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। সেই ৫২'র একুশ আমাদের চেতনা, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্ব। 

বাঙালীরা মাতৃভাষা রক্ষার দাবিতে ধীরে ধীরে ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত হতে থাকে। একের পর এক ভারি হতে থাকে রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন। বাংলা ভাষার দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মেনোফেস্টো ও বুদ্ধিজীবীদের লেখার মধ্য দিয়ে এ দাবি সামনে আসে। বিশেষ করে বুদ্ধিজীবী ও ছাত্রদের ভূমিকা বেশি ফুটে ওঠে। ১৯৪৭ সালের ৩০ জুন "পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা" শীর্ষক প্রবন্ধে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে মত দেন। একই বছরের ৩০ জুলাই দৈনিক আজাদের প্রকাশিত "পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা সমস্যা " শীর্ষক নিবন্ধে ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেছিলেন- এটা কেবল বৈজ্ঞানিক শিক্ষানীতির বিরোধীই নয়, প্রাদেশিক সায়িত্ব শাসিত ও অনিয়তন্ত্রন অধিকারের বিগর্হিতও বটে। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ পূর্ববঙ্গে ধর্মঘট ছিল। ঐদিনেই বাংলার মানুষসহ পৃথিবীর সব মানুষ জানতে পারল পূর্ববাংলার জনতার দাবি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হবে। কৃষক, শ্রমিক,  শিক্ষিত জনতা, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী সবারই ধর্ম ঘটে অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। হাজার বছরের গৌরবোজ্জ্বল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার বাঙালি ও নিজের ভাষাভিত্তিক পরিচিতি ধারণ করার জন্য সংগ্রামী জনতা রাজপথে অবস্থান করে। ১১ মার্চ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিন এর নির্দেশে পুলিশ গুলি চালাই ছাত্র জনতার উপর। পুলিশের গুলির কারণেই ভাষা আন্দোলনের গতি তীব্র গতিতে রুপ নেয়। দিন যত যায় ততই গরম হতে থাকে ঢাকা। এতো সংগ্রাম আন্দোলনকে তোয়াক্কা না করে ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি মুসলিম লীগ কাউন্সিলে প্রধান মন্ত্রী নাজিমুদ্দিন ঘোষণা দেন পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। আরও একবার জ্বলে উঠল বাঙালিরা। ২৯ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ মিছিল করে। ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতীকী ধর্মঘট করে। ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বার লাইব্রেরিতে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানির সভাপতিত্বে সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন হয়। ৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকা শহরে ধর্মঘট, সভা, মিছিল, পিকেটিং হয়।২১ ফেব্রুয়ারী কর্মসূচি পালনের জন্য রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ঘোষণা দেয়। আর ঐ দিনেই পুলিশ ক্ষিপ্র হয়ে গুলি চালাই ছাত্র জনতার উপর আর ঐ গুলিতে শহিদ হয় সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার আরও নাম না জানা অনেকে।আর ইতিহাসের পাতাই জায়গা করে নিল ৫২'র  ২১শে ফেব্রুয়ারী। এখন আন্তর্জাতিক পরিসরে পালিত হচ্ছে " আন্তর্জাতিক  মাতৃভাষা দিবস " হিসাবে। এটাই বাঙালির ঐতিহ্য আর বাঙালি জাতীর ব্যাঘ্র থাবার অর্জন। 

লেখক - কলামিস্ট ও সাংবাদিক। 

Related Article