০১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
ছবি: যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতি যমুনার নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্প (বিভেটমেন্ট) সহ ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ১০/১২টি গ্রাম সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে
বগুড়ার ধুনটে বালু দস্যু যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে পাউবোর করা মামলা চার দিনেও রেকর্ড হয় নি।
এতে পাউবো ও ধুনট থানা পুলিশের প্রতি যমুনা পাড়ের ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের সচেতন মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ধুনট উপজেলা যুবলীগের ত্রান বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন যমুনা নদীর চৌবেড় মৌজা বালু তোলার ইজারা নিয়ে তিনি সহ তার সাব ইজারাদার ৫/৬ ব্যক্তি অবৈধ ভাবে যমুনা নদী বৈশাখী, শহরাবাড়ি, শিমুলবাড়ি, বানিয়াযান, কৈয়াগাড়ি ও নিউ সারিয়াকান্দি এই ৬টি মৌজা অবৈধ দখলে নিয়ে প্রতিদিন ১০/১৫ টি ড্রেজার ও বাল্কহেড মেশিন দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।
শহরাবড়ি স্পারের কোল ঘেষে ১০/১৫ টি বাল্কহেড ও ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অন্তত ৬টি পয়েন্টে বালুর পাহাড় গড়েছেনে। এতে শহরাবাড়ি স্পারের ব্যপক ক্ষতি হয়। এছাড়াও বানিয়াযান স্পার , বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতি যমুনার নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্প (বিভেটমেন্ট) সহ ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ১০/১২টি গ্রাম সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়ে।
যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন ও তার সহযোগীদের অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী লিটন আলী ২২ জানুয়ারী সরেজমিনে তদস্ত করে বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড মেশিন শহরাবাড়ি স্পারের কোল ঘেষে বসানোর ফলে স্পার সহ নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতি অশঙ্কা করে তাকে মৌখিক ভাবে নিষেধ করে।
যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন উপবোর ওই কর্মকর্তার নিষেধ উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন অব্যহত রাখে। এতে ওই কর্মকর্তা গত ২৫ জানুয়ারী ধুনট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এ বিষয়ে ২৮ জানুয়ারী ‘সমকালে’ একটি স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার নজরে আসে এবং ওই দিন বালু খেকো যুবনেতা বেলালের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় একটি মামলা রেকর্ড ভুক্ত করা হয়েছে বলে ধুনট থানার ওসি সৈকত হোসেন সমকালকে জানান। কিন্ত এ ঘটনার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও বেলালের বিরুদ্ধে মামলা তো দুরের কথা কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ঘটনার বিষয় জানতে ধুনট থানার ওসি সৈকত হোসেন বলেন, বগুড়া পাউবোর উপবিভাগী প্রকৌশলী সোহেল রানা মামলা রেকর্ড করতে মানা করায় মামলাটি এখনো রেকর্ড ভুক্ত করা হয়নি এবং কোন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি।
এ বিষয়ে পাউবোর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সোহেল রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার কার্যক্রম চলমান থাকার দাবী করে বলেন, বালু ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন ক্ষতিগ্রস্থ শহরাবাড়ি স্পার মেরামত করে দেওয়ার অঙ্গিকার করায় তাকে ৪ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বেলাল হোসেন যমুনা নদীর ধুনট ও পাশ^বর্তী সারিয়াকান্দি উপজেলার বোহাইল ইউনিয়ন দখলে নিয়ে বালু উত্তোলন করতে থাকে।
গত ২৯ জানুয়ারী সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান যমুনা নদীর বোহাইল ইউনিয়নের কালিয়ান এলাকায় অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলন কাজে জড়িত থাকায় বেলাল হোসেনের ১২ জন শ্রমিককে আটক করে মোবাইল কোটের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছেন এবং বাল্কহেড মেশিন জব্দ করেছেন।
বানিয়াযান গ্রামের আমিনুল ইসলাম পলাশ, ইয়াকুব আলী মাষ্টার ও ফজলুল হক ডলার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বগুড়ার পাউবো কর্মকর্তারা , থানার পুলিশ ও ইউএনও বালু দস্যু বেলালের কালো টাকার কাছে নতুজান হয়ে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
তারা অবিলম্বে যমুনা ভাঙ্গন প্রতিরোধে নির্মিত শহরাবাড়ি স্পার সহ বিভিন্ন স্থপনার ক্ষতি করার অভিযোগে বেলাল হোসেনকে গ্রেফতার ও উত্তোলন করা অবৈধ বালু জব্দ করে নিলামের মাধ্যমে বিক্রির দাবী করেছেন।
ধুনটের ইউএনও আশিক খান যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, পাউবো মুলত থানা পুলিশ বরাবর অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগের অনুলিপি আমাকে অবগত করেছেন। তাই আমি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছি না।