০৩ অগাস্ট ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
শিক্ষা / অপরাধ

মান্দায় জাল স্বাক্ষরে কমিটি বাতিলের অপচেষ্টা, অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার

৩০ Jul, ২০২৫

রইচ উদ্দীন আহম্মেদ,
মান্দা উপজেলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি

ছবি: কুড়িয়াপাড়া দাখিল মাদ্রাসা

নওগাঁর মান্দায় কুড়িয়াপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি বৈধভাবে গঠিত মাদ্রাসার এডহক কমিটি বাতিলের উদ্দেশ্যে কমিটির দুই সদস্যের জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে ভুয়া পদত্যাগপত্র তৈরি করেন এবং তা শিক্ষা বোর্ডে দাখিল করেন।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল নবী গত সোমবার জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের আংশিক সত্যতা পাওয়া গেলে গত ২১ মে মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল নবী, সুপার মো. জিয়াউর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

জানা যায়, গত মার্চ মাসের ৬ তারিখে ওই মাদ্রাসার এডহক কমিটি পাশ করে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। এর ৫দিন পর ওই মাসের ১১ তারিখে সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে একটি অভিযোগ দেন মাদরাসার সুপার এবং সেইসাথে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার বরাবর শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য বাবুল হোসেনের পদত্যাগ পত্র দিয়ে কমিটি বাতিলের আবেদন করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য মো. বাবুল হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে সুপার মো. জিয়াউর রহমান একটি ভুয়া পদত্যাগপত্র প্রস্তুত করেছেন বলে মাদ্রাসার সভাপতি অভিযোগ দেন।

সরেজমিনে মাদরাসায় গিয়ে জানা যায়,  মাদ্রাসার সুপার মো. জিয়াউর রহমান মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল নবীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে রেজিস্ট্রারের কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ অভিযোগের প্রায় দুই মাস পর গত মে মাসের ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত এক মিটিংয়ে সকল শিক্ষক, কর্মচারী এবং পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে এডহক কমিটির সভাপতি ও মাদরাসার মিলেমিশে কাজ করার বিষয়ে একটি রেজুলেশন করা হয়। এতে সর্ব-সম্মতভাবে বর্তমান কমিটি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর মাদ্রাসার সুপারের করা চাঁদাবাজির অভিযোগের তদন্ত এলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। 

এ বিষয়ে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, সভাপতি সুপারের কাছে চাঁদা চেয়েছেন এমন কোন কথা আমরা কখনো শুনিনি। তবে মাদরাসার সভাপতির তালিকা পাঠানো নিয়ে সভাপতির সাথে মনোমালিন্য ছিল। একারণেই হয়তোবা এ অভিযোগ করতে পারেন। 

পদত্যাগ পত্রে শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরের মিল না পাওয়ায় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি স্বাক্ষর করেছেন বলে দাবি করেন। তখন তার স্বাক্ষর করতে বললে তিনি যে স্বাক্ষর করে দেন সেই স্বাক্ষরের সাথে পদত্যাগপত্রের স্বাক্ষরের কোন মিল নেই বলে সকল শিক্ষক-কর্মচারীরাও সেটা নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিভাবক প্রতিনিধি বাবুল হোসেন বলেন, আমি কমিটি থেকে পদত্যাগ করিনি।

মাদরাসার সুপার মো. জিয়াউর রহমান  বলেন, তিনি আমাকে বলেছেন, কমিটি বের করে আনতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে সেটা দিতে হবে। তবে সভাপতি টাকা চেয়েছেন তার কোন প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি এবং এই বিষয়ে কাওকে কিছু জানাননি বলে দাবি করেন। 

জানতে চাইলে মাদরাসার সভাপতি মো. রেজাউল নবী এ ঘটনাকে চরম অনৈতিক ও প্রতারণামূলক উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের জালিয়াতি শুধু আইন পরিপন্থীই নয়, বরং প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অবজ্ঞাস্বরূপ। আমি দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে অভিযোগ করেছি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ  বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে একটি তদন্ত সংক্রান্ত চিঠি পাওয়া গেছে। এখনো তদন্ত সম্পন্ন হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। 

অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন  বলেন, অভিযোগ জমা পড়েছে কি না, তা আমি খতিয়ে দেখছি। যাচাই করে আপনাকে জানাচ্ছি।

Related Article