০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ছবি:
শিবির সন্দেহে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের জামাল এবং দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একরাম নামের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে অনুষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী একরাম বলেন, ‘আমার বিভাগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে বন্ধুর সাথে গল্প করছিলাম। এমন সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে আমাকে নিচে নিয়ে যান এবং জিজ্ঞেস করেন আমি শিবির করি কিনা। আমি কোনো রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট নই জানালে তারা আমার এক বন্ধুর মোবাইল নাম্বার জানতে চান। তার নাম্বার আমার কাছে নেই বললে তারা আমাকে মারধর করেন।’
একরাম আরো বলেন, ‘পরীক্ষার শেষে আমি একটু রিলাক্স করছিলাম। এমন সময় আমকে ডেকে হেনস্তা করেছে। আমি কোনো রাজনীতি করি না, শুধু এখানে লেখাপড় করতে এসেছি। আমাদের সেই অধিকারটুকুও কি নেই?’
ভুক্তভোগী জামাল বলেন, ‘আমি ক্লাস শেষে জিয়া মোড় হয়ে রুমে আসছিলাম। এমন সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে ধরে অনুষদ ভবনে নিয়ে যান। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করেন আমি শিবির করি কিনা। আমি শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট না জানালে তারা আমাকে চড়-থাপ্পড় মেরে বলেন, দৌড় দে। পরে আমি চলে যেতে গেলে আমাকে ধাওয়া করে।’
পরে নেতা-কর্মীরা অনুষদ ভবনের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রশাসন ভবনে শোডাউন দেন তারা। এ সময় তাদের অনেকের হাতে লাঠি দেখা যায়।
এতে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কামরুল হাসান অনিক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খাঁনসহ প্রায় অর্ধশত নেতা-কর্মী ছিলেন।
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে একটা তথ্য ছিল অনুষদ ভবনে শিবিরের এক পোস্টেড নেতা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার জন্য এসেছে। তখন আমরা সেখানে গেলে সে পালিয়ে যায়। পরে আমরা তার দুজন সহযোগীকে ধরি। আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে, তার কাছে অস্ত্র আছে কিন্তু পরে চেক করে কিছু পাইনি। আর ছেলেপেলেদের (কর্মীদের) কন্ট্রোল করা যায়নি, ফলে তারা একটু মারধর করেছে তাদের।’
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, সম্ভবত অনুষদ ভবনে তাদের কোনো মিটিং ছিল। তাদের কোনো পরিকল্পনা থাকতে পারে। তাই নেতা-কর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। কিন্তু তাদের মারধর করে বলে আমার জানা নেই।
ভুক্তভোগীকে শিবির নেতা দাবি করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ডিএসবি নুরুজ্জামানের কাছে তথ্য আছে। কিন্তু ডিএসবি নুরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে তার কাছে এমন কোনো তথ্য নেই।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।