২৭ Jul, ২০২৫
ছবি: মানববন্ধন
"জুলাই বিপ্লবের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই" স্লোগানে ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১:৩০ মিনিটে রুহিয়া চৌরাস্তায় বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন ঐক্য পরিষদ, রুহিয়া থানা শাখার আয়োজনে মোঃ আব্দুল আলীমের সভাপতিত্বে এবং রুহিয়া ব্রাইট স্টার মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অশ্বিনী কুমার বর্মণের সঞ্চালনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন দিশারী কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ অনন্ত কুমার দাস, সান রাইজ কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, আখানগর কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ব্রাইট স্টার মডেল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রত্না, সুমাইয়া, আরমান এবং এ.বি. কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থী সামি, হিমু।
এ সময় বক্তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি বিদ্যালয়ের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী ভূমিকা পালন করছে এবং কিছুটা হলেও বেকার সমস্যা দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
কিন্তু হঠাৎ করে গত ১৫ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্মারক নং-৩৮.০১.০০০০.১০৭.৩৩.০০১.২০২৫ অনুযায়ী ১৭ জুলাই প্রকাশিত পত্রের মাধ্যমে জানা যায়, কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শুধু সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, এটি একটি বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক সমাপনী এবং ২০২২ সালের বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছে। বৃত্তি শুধু আর্থিক অনুদান নয়, এটি একজন শিশুর আত্মবিশ্বাস, মেধার স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির অনুপ্রেরণা।
একজন শিশুর বন্ধুরা যখন বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে অথচ সে পারছে না শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের ধরন ভিন্ন হওয়ায়—তখন তার মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বৈষম্যমূলক মনোভাব তৈরি হবে।
বক্তারা আরও বলেন, এ সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হবেন, যার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
তারা প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনি আমাদের অভিভাবক, আপনার প্রতি জনগণের আস্থা রয়েছে। যাতে বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠীকে আন্দোলনে না নামতে হয়, সেদিকে সুদৃষ্টি দিন। ১৭ জুলাইয়ের ওই পত্রটি বাতিল করে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।