০২ Jun, ২০২৪
ছবি: উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীবৃন্দ
মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকার বিরোধী দল গুলো অংশ না নেওয়ায় ভোটারদের মধ্যে তেমন কোনো নির্বাচনী উত্তাপ নেই। তারপরও নির্বাচন ঘিরে শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। তৈরী করেছেন দুটি নির্বাচনী প্যানেল করে ।
তবে আওয়ামী লীগের ঘরের এই বিবাদের সুযোগ নিয়ে উপজেলা চেয়াম্যান হতে চান দল থেকে বহিস্কৃত টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ফিরোজ হায়দার খান।
জানা গেছে, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে দুটি প্যানেলে প্রার্থীরা জোট বদ্ধ হয়ে নির্বাচনে প্রচারণা করছে।
এক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাহরীম হোসেন সীমান্ত ( আনারস প্রতীক)। তাঁর সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম (তালা প্রতীক) এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা (ফুটবল প্রতীক)।
অন্য প্যানেলে চেয়ারম্যন প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির (কাপ-পিরিচ প্রতীক)।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোড়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শওকত মিয়া (টিউবল ) এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও চলচিত্র তারকা ডি এ তায়েফের সহধর্মিনী মাহাবুবা শাহরীনকে (কলস) পক্ষে নিয়ে একসঙ্গে প্রচার-প্রচারণা করছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইচ চেয়ারম্যান এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির প্রতিবেদককে বলেন, 'বিগত সংসদ নির্বাচনে যারা নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন, মির্জাপুরে সাধারণ জনগণ তাদেরকে বয়কট করবে। জনগণের অনুরোধে আমি প্রার্থী হয়েছি আশা করি ৫তারিখের নির্বাচনে তারা আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করবে
তবে কোনো প্যানেলেই সুযোগ না পেয়ে একাই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক চাঁদ সুলতানা।
নিজ দলের নেতারা তাকে ছাড় না দেয়ায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্টাটাস দিয়ে ক্ষোভও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের বিভক্তিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও বিএনপি’র ভোটের একটা অংশ তাঁকে সমর্থন দেবে।
তাছাড়া পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের একটা অংশ নির্বাচনী মাঠে নামিয়ে তাঁর নির্বাচনী প্রতীক মোটর সাইকেলের প্রচার করছেন তিনি। ফিরোজ হায়দার খান প্রতিবেদককে বলেন, বিএনপি’র নেতা কর্মীরা তাঁর কাজ করছেন কেউ প্রকাশ্যে কেউ গোপনে। আওয়ামী লীগের বিভক্তি কাজে লাগিয়ে জয়ের পথ সহজ করতে চান তিনি।
চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক সাংসদ একাব্বর হোসেনের পুত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক তাহরীম হোসেন সীমান্ত প্রতিবেদককে বলেন, 'মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুইভাগে বিভক্ত তবে নির্বাচনের পর আলোচনা করে এর সমাধান করা হবে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁর প্রতিপক্ষ বর্তমান সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, 'জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মির্জাপুর আসনের এমপি খান আহমেদ শুভ সহ একাধিক বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি। সমাধান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি।
বিরোধী দলবিহীন উপজেলা পরিষদ নিরুত্তাপ নির্বাচনে কে হবেন মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তা দেখার জন্য অপেক্ষায় পুরো উপজেলাবাসি।