১৩ নভেম্বর, ২০২৩
ছবি: বৈধ ৭টি গরুর ছাড়পত্রের কাগজের
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে গ্রামের ভিতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ৭টি গরু ছিনতাই করলো সীমান্ত প্রহরী চাঁনশিকারী কোম্পানী কমান্ডর বিজিবির একটি দল। গরু মালিক ও স্থানীয় জনগণ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৩নং দলদলী ইউনিয়নের মুসলিমপুর (বীরবান) গ্রামে সীমান্তপ্রহরী চাঁনশিকারী বিজিবি কোম্পানী কমাণ্ডার সুবেদার সিরাজুল ইসলামের হুকুমে বিজিবির একটি টহলপার্টি গতকাল (১২ নভেম্বর ২০২৩ ইং) রাত প্রায় ১২টার দিকে ঐ গ্রামে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ৭টি গরু জোড়পূর্বক এক কথায় ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
বিজিবির টহলপার্টি গরু মালিক হাসান আলী ও তার স্ত্রীকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি ও গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গরুগুলি নিয়ে যায়। গরু মালিক মুসলিমপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে হাসান আলী এ প্রতিবেদককে কেঁদে কেঁদে বলেন, আমি চাঁপাইনাবগঞ্জ জেলার রানীহাটী হতে গরু বিক্রেতা সিরাজুল ইসলামের নিকট থেকে নগদ ৩লাখ ২২হাজার টাকা মূল্য দিয়ে এবং গরুগুলির ছাড়পত্র নিয়ে আসি। তিনি আরো বলেন, গত শনিবার (১১ নভেম্বর ২০২৩) গরুগুলি শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটী গ্রামের গরু ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের নিকট ক্রয় করি, আর গত রাতে বিজিবি লোকেরা আমাকে ও আমার স্ত্রী মুক্তারাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি বন্দুক দেখিয়ে আমার ৭টি গরু নিয়ে যায়। গরুগুলি ছিলো আমার সম্বল। এ গরুগুলিকে ৬/৭ মাস প্রতিপালন করে সামনের কুরবানীতে বিক্রয় করলে কিছু মুনাফা হতো। কিন্তু বিজিবির লোকেরা যেভাবে আমার উপর চড়াও হয়ে গরুগুলি নিয়ে গেলো, এতে করে আমি পথে বসে গেলাম। আমি আমার নিজস্ব কয়েকটা গরু বিক্রি করে আর কিছু ধারকর্য্য করে ঐ ৭টি গরু ক্রয় করে নিয়ে আসি। এমনকি আমার কাছে বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও গরুগুলি নিয়ে যায় বিজিবিগণ ।
গোপনসূত্রে জানা গেছে, ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের মুশরীভূজা গ্রামের কথিত বিজিবির সোর্সের মাধ্যমে চাঁনশিকারী বিজিবি ক্যাম্পের একটি টহলপার্টি উপরোক্ত ঘটনাটি ঘটায়। ঘটনার সময় দলদলী ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় জনগণ উপস্থিত বিজিবি সদস্যদের বার বার অনুরোধের পরও গরুগুলি নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে চাঁনশিকারী বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার সিরাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমার কয়েকজন বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে ইন্ডিয়া থেকে অবৈধ পথে আসা গরুগুলি আটক করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আর আমরা ভাই হুকুমের গোলাম, উপর মহল থেকে যা ওর্ডার করা হয়, সেই অনুযায়ী আমাদের কাজ করি। স্থানীয় সোর্সের কথা জানতে চাইলে জবাবে বিজিবি কমান্ডার বলেন, এ ব্যাপারে আর কোন তথ্য দিতে আমি রাজি নই বলে সম্পূর্ন ব্যাপারটি এরিয়ে যান।
এ ব্যাপারে নয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটির ব্যাপারে আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর ২০২৩) আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং-এ সংশ্লিষ্ট দলদলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ মোজাম্মেল হক চুটু সাহেব কথা তুলেন এবং বিজিবি’র সি,ও নওগাঁ’র সাথে কথা হয়েছে। আমি বিজিবি প্রতিনিধিকে বিষয়টি অবিহিত করেছি, তিনি ঘটনাটিতে মিসটেক হয়েছে বলে জানান এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি। এ ঘটনাটির ব্যাপারে ডিসি স্যারকে অভিহিত করবো বলে তিনি জানান।