১৫ Jun ২০২৫
হোম স্বাস্থ্য সারাদেশ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি ও বাণিজ্য খেলাধুলা বিনোদন আন্তর্জাতিক ধর্ম ও জীবন লাইফ স্টাইল শিক্ষা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান পরিবেশ চাকরি বা ক্যারিয়ার মতামত আইন-আদালত কৃষি ও প্রযুক্তি বিশেষ সংবাদ অপরাধ সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বকাপ ফুটবল
সারাদেশ / বিনোদন

কিংবদন্তি অভিনেতা ফরিদীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা

১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

মো:তৌহিদুল ইসলাম,
পলাশবাড়ী উপজেলা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

ছবি: সংগৃহিত

কিছু মানুষের জন্মই হয় শিল্পী হওয়ার জন্য। ঠিক সে রকম একজন মানুষ ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। তিনি শিল্পী হয়েই জন্মেছিলেন। একটা সাধারণ জিনিস কীভাবে অসাধারণ করে ফুটিয়ে তুলতে হয় সেটা জানতেন ফরীদি।

হুমায়ুন  ফরীদি ভীষণ  ভালো কৌতুক বলতেন। যেখানেই যেতেন, সব সময়ই বন্ধু ও কলিগদের মাতিয়ে রাখতেন। কৌতুক ছিল তার জীবনের একটা অন্যতম অংশ। তাই যেকোনো মুহুর্তে যেকোনো বিষয় নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে কৌতুক করতে পারতেন তিনি।

একদিন এ বিষয়ে  জিজ্ঞেস করেছিলেন একজন, তখন ফরীদি বলেছিলেন, আরে জীবনটাই তো একটা কৌতুক। ফরীদির সঙ্গে দীর্ঘদিন যারা ঢাকা থিয়েটারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করেছে তারা উনার সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জানে।

মঞ্চ, টেলিভিশন ও সিনেমায় আলোড়ন তোলা এই অভিনেতা অসাধারণ সব চরিত্রে সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে সব শ্রেণির দর্শকের কাছে অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

বাংলা সিনেমায় খলনায়কের ভূমিকায় তিনি ছিলেন অসাধারণ। একটা সময় ছিল যখন টিভি নাটক মানেই হুমায়ুন ফরীদি। বাংঙ্লীগা পরিবারের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম টিভি নাটক দেখতে বসে উন্মুখ হয়ে থাকতো কখন হুমায়ুন ফরিদীকে দেখা যাবে।

একটা সময় তো সিনেমাপ্রেমী মানুষ গুলো শুধু হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় দেখতেই হলে যেতেন। সেই হুমায়ুন ফরীদি ২০০৩ সাল থেকে সিনেমাতে অভিনয় প্রায়ই ছেড়ে দিয়েছিলেন।

অথচ ১৯৮৫ সালের দিকে ফরীদি অনুধাবন করেন তিনি আসলে অভিনয় ছাড়া আর কিছু করতে পারবেন না। অন্য কিছু থেকে রোজগার করে জীবন নির্বাহ করা সম্ভব নয়।

তার একমাত্র অবলম্ব্বন কিংবা পুঁজি হচ্ছে অভিনয়। মঞ্চ নাটক থেকে টিভি নাটকে অভিনয় করতে করতে অনেকটা বড় পর্দার প্রতি  দুর্বলতা থেকেই ১৯৯০ সাল থেকে শুরু করেন চলচ্চিত্রে যাত্রা।

ফরীদির ভাষায়, আমার চলচ্চিত্র অভিনয়টাকে যে যাই বলুক না কেন, ওটা না করলে আমি বাঁচতে পারতাম না। তখন ফরীদি চলচ্চিত্রে কাজ না করলে হয়তো যাত্রা দলে ভিড়ে যেতেন- এমন প্রস্তুতিও ছিল তার মধ্যে।

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আমরা তাকে হারিয়েছি চিরতরে। কিন্তু দুর্দান্ত নানা কর্ম আর তার অসাধারণ সব সৃষ্টিতে তিনি আছেন চির অমলিন হয়ে। তার দাপুটে অভিনয় তাকে বাঁচিয়ে রাখবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।

হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন আমাদের আইকন। অভিনয়কে কীভাবে জীবন্ত করে উপস্থাপন করতে হয় তা খুব গভীর ভাবে  জানতেন তিনি।

এভাবেই ১৩ই ফেব্রুয়ারী এলেই ফাগুনের আগমনী সুরে ফরীদির মৃত্যুবার্ষিকী করুণ সুর বেজে উঠে ।

দেখতে দেখতে এতগুলো দিন চলে গেল। ফরীদির এত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া ঠিক হয়নি, আমাদের আরও অনেক কিছু পাওয়ার ছিল তার কাছ থেকে।

নতুন যারা কাজ করছে তাদের বলব, ড্রেসআপ- গেটআপে কীভাবে নিজেকে চরিত্রের মতো করে তৈরি করে নিতে হয় তা হুমায়ুন ফরীদিকে দেখলে বোঝা যায়।

নাটক, সিনেমা প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সফলতার শীর্ষে। নায়ক, ভিলেন বা কমেডি যে চরিত্রই করুন না কেন সেটাকে অভিনয় মনে হয়নি, এতটাই সাবলীল ছিল তার পর্দায় উপস্থিতি।

বাস্তব জীবনেও সাবলীল ছিলেন তিনি। বাস্তবতার সঙ্গে সহজে মানিয়ে নিতে পারতেন। মানুষের মাঝে ভালো-খারাপ সবই থাকে। ফরীদির মাঝে অনেক ভালো গুণ ছিল, যা অনুকরণীয়।

Related Article